বগুড়ার শেরপুরে মামুরশাহী দাখিল মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি গঠনে অনিয়ম

শেরপুর( বগুড়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৪ ১৬:২০ ।
প্রধান খবর
পঠিত হয়েছে ১৪ বার।

বগুড়ার শেরপুরে মামুরশাহী দাখিল মাদ্রাসায় নিজের পছন্দের লোকদের নিয়ে পরিচালনা কমিটি গঠনের অভিযোগ উঠেছে সুপারের বিরুদ্ধে। নির্বাচনের মনোনয়নপত্র উত্তোলন ও জমাদান হয়েছে গোপনে। শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের উপস্থিতি ছাড়াই কাগজে-কলমে নির্বাচন দেখিয়ে কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শেষ হতে চলেছে। এমনকি মনোনয়নপত্র উত্তোলন ও জমা দেওয়ার সময় শেষ হওয়ার ১০দিন পর নির্বাচনের তফসিল নোটিশ বোর্ডে প্রকাশ করা হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বিক্ষুব্ধরা ‘গোপন নির্বাচন’ বাতিল করে পুনঃতফসিল ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানাছে, শেরপুর উপজেলার শাহবন্দেগী ইউনিয়নের মামুরশাহী গ্রামে স্থানীয় শিক্ষানুরাগীরা মামুরশাহী দাখিল মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমান মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির মেয়াদ আগামি জুনে শেষ হবে। নিয়ম অনুযায়ী তিনমাস আগে থেকেই প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেন মাদ্রাসার সুপার মাওলানা আমিনুল ইসলাম। অভিযোগ রয়েছে সম্পুর্ণ গোপনে এই কাজটি করছেন তিনি। নিজের পছন্দের লোকদের কমিটির সদস্য বানাতে গোপনে কাগজে-কলমে নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।

ভোটার তালিকা থেকে শুরু করে নির্বাচনী তফসিল সবকিছুই করা হয়েছে গোপনে। সুপারের পছন্দের লোক ছাড়া যেন কেউ নির্বাচনে অংশ নিতে না পারেন সেজন্য ঘোষিত তফসিলের মনোনয়নপত্র উত্তোলন ও জমা দেওয়ার সময় শেষ হওয়ার দশদিন পর গত শনিবার (২৭ এপ্রিল) সকালে মাদ্রাসার নোটিশ বোর্ডে নির্বাচনের তফসিল প্রকাশ করা হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদ্রাসার একাধিক শিক্ষক বলেন, ‘কবে কীভাবে কমিটির সদস্য নির্বাচন হচ্ছে তা আমরা জানি না। এমনকি শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনের বিষয়টিও জানা নেই। তাই তাদের কোনো মতামত ও ভোট নেওয়া হয়নি।’ 

মেয়াদ উর্ত্তীণ হওয়া কমিটির সভাপতি আবু তালেব আকন্দ বলেন, ‘শুনেছি কমিটি হচ্ছে। কিন্তু সেটি কোন প্রক্রিয়ায় করা হচ্ছে তা বলতে পারবো না। তবে অভিভাবকসহ সবার মতামত নিয়ে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি গঠন করা উচিত।’

শেরপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘কমিটির সদস্য নির্বাচনে অনিয়ম ও জালিয়াতির বিষয়ে লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মামুরশাহী দাখিল মাদ্রাসা সুপার মাওলানা আমিনুল ইসলাম অভিযোগ প্রসংগে বলেন, ‘প্রতিষ্ঠান ছুটি থাকায় নির্বাচনের বিষয়টি বেশি প্রচার-প্রচারণা করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া কমিটিতে আসার জন্য তেমন কোনো লোকই খুঁজে পাই না, তাই প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে কী-লাভ?’

এদিকে, সুপার ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করার এই নির্বাচনী খেলায় মাদ্রাসার শিক্ষক, অভিভাবকসহ এলাকাবাসী বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে যেকোন সময় ভয়াবহ ঘটনার আশংকা করছেন এলাকাবাসী। বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন তারা।